আল-বাকারা ১৪৭-১৬৪

পৃষ্টা নং-৭৭

আনুষঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়ঃ

এ বর্ণনার দ্বারা এ কথাও প্রতিয়মান হয়ে যায় যে, এখানে সন্তানকে শুধু সন্তান হিসাবে চেনাই উদ্দেশ্য নয়৷ কারণ, তার পৈতৃক সম্পর্ক ক্ষেত্রবিশেষে সন্দেহজনকও হতে পারে৷ স্ত্রীর খেয়ানতের দরুন সন্তান তার নিজের নাও হতে পারে৷ বরং এখানে আকার-অবয়বের পরিচয় জানা হলো উদ্দেশ্য৷ পুত্র-কন্যা প্রকৃতপক্ষে নিজের হোক বা নাই হোক, কিন্তু মানুষ সন্তান হিসাবে যাকে প্রতিপালন করে, তার আকার-অবয়ব চেনার ব্যাপারে কখনও সন্দেহ হয় না৷

আলোচ্য আয়াতে কেবলা পরিবর্তনের বিষয়টি বলতে গিয়ে فول وجهك شطرالمسجدالحرام  বাক্যটি তিনবার এবং وحيث ماكنتم فولواوجوهكم شطره বাক্যটি দু’বার করে পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে৷ এর একটা সাধারণ কারণ এই যে, কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশটি বিরুধীদের জন্য তো এক হৈ-চৈয়ের ব্যাপার ছিলই, স্বয়ং মুসলমানদের জন্যও তাদের ‘ইবাদতের ক্ষেত্রে ছিল একটা বৈপ্লবিক ঘটনা৷ কাজেই এই নির্দেশটি যদি যথার্থ তাকীদ ও গুরুত্ব সহকারে ব্যক্ত করা না হতো, তাহলে মনের প্রশান্তি অর্জন হয়ত যথেষ্ট সহজ হতো না৷ আর সেজন্যই নির্দেশটিকে বার বার পুণরাবৃত্তি করা হয়েছে৷ তদুপরি এতে এরূপ ইঙ্গিতও রয়েছে যে, কেবলার এই যে পরিবর্তন, এটাই সর্বশেষ পরিবর্তন৷ এরপর পুনঃপরিবর্তনের আর কোন সম্ভাবনাই নেই৷ প্রথমবারের নির্দেশঃ

“অতঃপর তুমি তোমার মুখমন্ডল মাসজিদুল-‘হারামের দিকে ফেরাও এবং যেখানেই তুমি থাক না কেন, এরপর থেকে তুমি তোমার চেহারা সেদিকেই ফেরাবে”, -এ নির্দেশটি মুকীম (সফরে না থাকা) অবস্থায় থাকার সময়ের৷ অর্থাৎ, যখন আপনি আপনার স্থায়ী বাসস্থানে অবস্থান করেন, তখন নামাযে মসজিদুল-‘হারামের দিকে মুখ করে দাঁড়াবেন৷ এরপর সমগ্র উম্মতকে লক্ষ্য করে বলা হচ্ছে যে- وحيث ما كنتم নিজের দেশ বা সফরে যেখানেই থাক না কেন, নামাযে বায়তুল্লাহ্‌র দিকেই মুখ ফেরাবে, এ নির্দেশ শুধু মসজিদে-নববীতে নামায পড়ার বেলাতেই নয়; বরং যেকোন স্থানের লোকেরা নিজ নিজ শহরে যখন নামায পড়বে, তখন তারা মসজিদুল-‘‘হারামকেই কেবলা বানিয়ে নামায পড়বে৷

এ নির্দেশ দ্বিতীয়বার পুনরুল্লেখ করার পূর্বে ومن حيث خرجت অর্থাৎ, “যেখানেই তুমি বের হয়ে যাও না কেন” কথাটা যোগ করে বুঝানো হয়েছে যে, নিজ নিজ বাসস্থানে মুকীম থাকা অবস্থায় যেমন তোমরা মসজিদুল-`হারামের দিকে মুখ করে নামায পড়বে, তেমনি কোথাও সফরে বের হলেও নামাযের সময় মসজিদুল-`হারামের দিকে মুখ করেই দাঁড়াবে৷

তৃতীয়বারের পুনরুল্লেখের যৌক্তিকতা বর্ণনায় এও বলা হয়েছে যে, বিরোধীরা যাতে কথা বলতে না পারে যে, তাওরাত এবং ইঞ্জীলে তো বলা হয়েছিল যে, তাওরাত এবং ইঞ্জীলে উল্লেখিত নির্দেশসমূহের মধ্যে আখেরী যমানার প্রতিশ্রুত নবীর কেবলা মসজিদুল-‘হারাম হওয়ার কথা, কিন্তু এ রসুল (সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কা’বার পরিবর্তে বায়তুল-মোকদ্দাসকে কেবলা করে নামায পড়ছেন কেন?

ولكل وجهة هو موليها শব্দটিতে وجهة শব্দটির আভিধানিক অর্থ এমন বস্তু, যার দিকে মুখ করা হয়৷ হযরত ‘আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস (রদ্বিয়াল্ল-হু ‘আনহু) বলেন, এর অর্থ কেবলা৷ এক্ষেত্রে হযরত উবাই ইবনে কা’ব-

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
সব বিভাগ