আল-মায়িদাহ, আয়াত ১-৫

سورة المائدة

সূরা আল-মায়িদাহ-৫

মদীনায় অবতীর্ণঃ আয়াত-১২০

পৃষ্ঠ নং-৩০২

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَوْفُوا بِالْعُقُودِ ۚ أُحِلَّتْ لَكُم بَهِيمَةُ الْأَنْعَامِ إِلَّا مَا يُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ غَيْرَ مُحِلِّي الصَّيْدِ وَأَنتُمْ حُرُمٌ ۗ إِنَّ اللَّـهَ يَحْكُمُ مَا يُرِيدُ ﴿١﴾

১.মুমিনগণ, তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ন কর। তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু হালাল করা হয়েছে, যা তোমাদের কাছে বিবৃত হবে তা ব্যতীত। কিন্তু এহরাম বাধাঁ অবস্থায় শিকারকে হালাল মনে করো না! নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা যা ইচ্ছা করেন, নির্দেশ দেন।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُحِلُّوا شَعَائِرَ اللَّـهِ وَلَا الشَّهْرَ الْحَرَامَ وَلَا الْهَدْيَ وَلَا الْقَلَائِدَ وَلَا آمِّينَ الْبَيْتَ الْحَرَامَ يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّن رَّبِّهِمْ وَرِضْوَانًا ۚ وَإِذَا حَلَلْتُمْ فَاصْطَادُوا ۚ وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآنُ قَوْمٍ أَن صَدُّوكُمْ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ أَن تَعْتَدُوا ۘ وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّـهَ ۖ إِنَّ اللَّـهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ ﴿٢﴾

২.হে মুমিনগণ! হালাল মনে করো না আল্লাহর নিদর্শনসমূহ এবং সম্মানিত মাসসমূহকে এবং হরমে কুরবানীর জন্যে নির্দিষ্ট জন্তুকে এবং ঐসব জন্তুকে, যাদের গলায় কন্ঠাভরণ রয়েছে এবং ঐসব লোককে যারা সম্মানিত গৃহ অভিমুখে যাচ্ছে, যারা স্বীয় পালনকর্তার অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করে। যখন তোমরা এহরাম থেকে বের হয়ে আস, তখন শিকার কর। যারা পবিত্র মসজিদ থেকে তোমাদেরকে বাধা প্রদান করেছিল, সেই সম্প্রদায়ের শুত্রুতা যেন তোমাদেরকে সীমালঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে। সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।

 

তাফসীরের সার-সংক্ষেপ:

يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلَالَةِ ۚ এখানে আয়াতটি নাযিল হওয়ার কারণ এবং ‘কালালাহ্‌র’ হুকুম বর্ণনার মাধ্যমে কয়েকটি বিষয় জানা গেল।

প্রথমতঃ وَإِنْ تَكْفُرُوا فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ বলার পর দৃষ্টান্ত স্বরুপ আহলে- কিতাবদের অবস্হা বর্ণনা করা হয়েছে। তদ্রুপ فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَاعْتَصَمُوا আয়াতে রসূলে কারিম (সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)- এর সা‘হাবায়ে- কেরামের উদাহরণ পেশ করা হয়েছে যাতে করে ও‘হী হতে যারা পরন্মুখ তাদের পথভ্রষ্টতা ও সর্বনাশ এবং ও‘হীর আনুগত্য ও অনুসরণকারীদের সাফল্য ও সৌভাগ্য সুস্পষ্টভাবে উপলব্দি করা যায়।

দ্বিতীয়তঃ জানা গেল যে আহলে কিতাবরা আল্লাহ তা‘আলার প্রবিত্র সত্তার জন্য অংশীদার ও পুত্র সাব্যস্ত করার মত হীন মানসিকতাকে নিজেদের ঈমানের অংগ বানিয়েছে। হঠকারিতার সাথে আল্লাহ্‌র ও‘হীর বিরোদ্ধাচরণ করেছে। অপরদিকে রসূলুল্ল-হ (সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সা‘হাবায়ে- কেরাম ধর্মীয় মুলনীতি ও ‘ইবাদাত তো দুরের কথা লেন- দেন, আচার- ব্যবহার, বিবাহ- শাদী, এমনকি মীরাস বন্টনের মত ব্যাপারেও নিজেদের বুদ্ধি- বৃত্তিকে যথেষ্ট মনে করতেন না, বরং সর্ব ব্যাপারেই রসুলুল্ল-হ (সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দিকে তাকিয়ে থাকতেন, ও‘হীর প্রতীক্ষা করতেন। যদি একবারে সান্ত্বনা না পেতেন, তবে আবার রসুলুল্ল-হ ( সল্লাল্ল-হু ‘আল্লাইহ ওয়াসাল্লাম)-এর সমীপে হাযির হয়ে জানতে চাইতেন।

তৃতীয়তঃ আরো বোঝা গেল যে,

হযরত সাইয়্যিদুল-মুরসালীন (সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও‘হীর হুকুম ছাড়া নিজের পক্ষ থেকে কোন আদেশ জারি করতেন না। যদি কোন ব্যাপারে পূর্ববর্তী কোন ও‘হী না থাকতো তবে তিনি ও‘হীর প্রতীক্ষা করতেন। এখানে আরও ইংগিত করা হয়েছে যে, আহলে- কিতাবদের আবদার অনুসারে ও‘হী এক সাথে নাযিল না হয়ে যথাসময়ে অল্প-অল্প নাযিল হওয়া অতি উত্তম ছিল। কারণ এমতাবস্হায় যে কোন ব্যাক্তি নিজ নিজ প্রয়োজন অনুসারে প্রশ্ন করার সুযোগ পায় এবং ও‘হীর মাধ্যমে জবাব জানতে পারে। যেমন, অত্র আয়াতে এবং কুরআন মজীদের আরো বহু আয়াতে তার নজীর দেখতে পাওয়া যায়।

এ ব্যবস্হাটি অধিক উপকারী ও কার্যকরী। তাছাড়া স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক বান্দাকে স্বরণ ও সম্বোধন করা বন্দার জন্য অতি সৌভাগ্য ও গৌরবের বিষয় যা পূর্ববর্তী উম্মতগণ হাসিল করতে পারেনি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
সব বিভাগ